বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
সাকিবুজ্জামান সবুর:
ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্যাপনে ৫৪টি পূজা মন্ডপে প্রতিমা প্রস্তুতের শেষ মুহূর্তে রংতুলিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। শনি ও রোববার উপজেলার বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমা তৈরিতে মাটির কাজ শেষ করে শিল্পীরা এখন রংতুলির কাজে ব্যস্ত। রঙের কাজ শেষ হওয়ার পরে নির্দিষ্ট দিনেই পূজার্চনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন হলে দেবীপক্ষের আগমন ঘটবে মহালয়ার মধ্য দিয়ে ভক্তদের জন্য।
প্রতিমা শিল্পী অমল চন্দ্র পাল বলেন, ২৫-৩০ বছর পূর্বে বাবার কাছ থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ শিখেছি। এ বছর ৭টি মন্ডপের প্রতিমা তৈরি করেছি। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাঁদা মাটি, খড়, কাঠ, বাঁশ ও সুতলি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ করতে হয়। তিনি আরো বলেন, মাটির কাজ শেষ করে এখন শ্রী শ্রী দয়ানন্দ অবদূত সেবাশ্রমের নব দূর্গার রংঙের কাজ করছি। দুই এক দিনের মধ্যে রংঙের কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।
প্রতিমা শিল্পী সহদেব সোম জানান, মৃৎশিল্পীদের আয়ের প্রধান উৎস প্রতিমা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ। বছরে সব থেকে বড় উৎসব দুর্গাপূজার মৌসুমের অনেকটা অপেক্ষায় থাকতে হয়। পুজোর দুই মাস আগে থেকে প্রতিমার তৈরি করতে বিভিন্ন মন্ডপের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি হয়। এ বছর ৭টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরি করছি।
প্রতিমা শিল্পী সজল জানায়, প্রতিমা তৈরির কাজ হয়েছে এখন রংঙের কাজ চলছে। আমি প্রতিমায় চুমকির কাজ করছি। প্রতিটি প্রতিমায় চুমকি লাগাতে আধা ঘন্টার মতো সময় লাগে। দুই-এক দিনের মধ্যে এই নব দূর্গা মন্দিরের কাজ শেষ হবে।
শ্রী শ্রী দয়ানন্দ অবদূত সেবাশ্রমের সভাপতি দুলাল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গা পূজা শুরু হবে। শ্রী শ্রী দয়ানন্দ অবদূত সেবাশ্রমে নব দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম এই মন্দিরের পূজা। প্রতি বছর এখানে অসংখ্য ভক্তরা আসেন। প্রতিমা তৈরির শেষ হয়েছে এখন রঙের কাজ চলছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে রংঙের কাজ হবে।
কাঠালিয়া উপজেলার শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ কেন্দ্রীয় সেবাশ্রমের সভাপতি জগবন্ধু মিত্র বলেন, শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ প্রতিমা শিল্পীরা এখন রংঙের কাজ করছেন। এ বছর স্বস্থ্যবিধি মেনে ১১ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর ৫দিন ব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজা চলবে।
কাঠালিয়া উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি বাবু বিমল চন্দ্র জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় উৎসব পালন করবো। তবে করোনার আগে যেমন বাড়তি জাঁকজমকপূর্ণ হতো, সেটা এবার হবে না। তারপরেও গত বছরের চেয়ে একটু বেশি আনন্দ-উল্লাস থাকবে এবারের দূর্গা পূজা। এ বছর উপজেলায় মোট ৫৪টি মন্দিরে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
কাঠালিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় বলেন, পূজা মন্ডপের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে টহল টিম সতর্ক অবস্থানে থেকে সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করবেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহম্মেদুর রহমান বলেন, এ উপজেলায় ৫৪ পূজা মন্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা উপলক্ষে প্রত্যেক মন্ডপে ৫০০ কেজি চাল বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।